বাজারে নানান কিসিমের ত্বক পরিচর্যার সামগ্রী আর প্রসাধনীর জিনিসের কোনও শেষ নেই! কোনটা কিনতে কোনটা কিনব ভেবেই নাজেহাল হতে হয়! কাকে বলে কমপ্যাক্ট কুশন আর কোনটা জেড রোলার ভালো করে বুঝে উঠতে না উঠতেই আর একটা নতুন জিনিস বাজারে চলে আসে আর সেটাই তখনকার মতো জীবনে অপরিহার্য হয়ে ওঠে! সাম্প্রতিককালে যে তিনটি জিনিস এভাবেই বাজার দখল করে নিয়েছে তা হল সিরাম, অ্যাম্পুল আর ইমালশন।
সিরাম সম্পর্কে অবশ্য ইদানীং কিছু কিছু ধারণা হয়েছে, কিন্তু অ্যাম্পুল আর ইমালশন নিয়ে বেশিরভাগ মেয়ে এখনও অন্ধকারে! সিরাম, অ্যাম্পুল আর ইমালশনের মধ্যে মিল একটাই, ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে তাদের একইভাবে ব্যবহার করা হয়। সিরাম, অ্যাম্পুল বা ইমালশন, যাই হোক না কেন, তা ময়শ্চারাইজার মাখার আগেই মেখে নিতে হয়। তবে তার মানেই যে এক্ষুনি তিনটে জিনিসই আপনাকে কিনে ফেলতে হবে, তা বলছি না মোটেও! বরং দেখে নিন কোন জিনিসটা কী কাজ করে, আর বুঝে নিন কোনটা আপনার দরকার!
সিরাম

হালকা অথচ কনসেনট্রেটেড ফরমুলা হল সিরামের বিশেষত্ব। বেশ কিছু অ্যাকটিভ উপাদান সিরামে থাকে যে ত্বকের বিশেষ বিশেষ সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। মুখে কালো দাগ, বলিরেখা, ত্বকের বিবর্ণ ভাব, যে কোনও সমস্যাতেই সিরাম লাগাতে পারেন। আপনার ময়শ্চারাইজারে যে সক্রিয় উপাদান থাকে, তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি থাকে সিরামে। তা ছাড়া সিরামে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডান্ট থাকে যা সানস্ক্রিন মাখার আগে মেখে নিলে বা রাতে মাখলে মুখ থেকে বয়সের দাগছোপ দূরে থাকে। টেক্সচারের দিক থেকে হালকা হলেও ত্বকের যত্নে সিরাম দারুণ উপকারী! সাধারণত সিরামের ঘনত্ব তেলের মতো হয়, কিন্তু জেলের মতো ঘনত্বও হতে পারে।
অ্যাম্পুল

সিরাম আর অ্যাম্পুল একই গোত্রের অন্তর্গত। সিরামের অ্যাকটিভ উপাদানের পরিমাণ অনেক গুণ বাড়িয়ে দিলে তা অ্যাম্পুলের সমগোত্রীয় হয়ে ওঠে এবং তা দিয়ে ত্বকের বিশেষ সমস্যার মোকাবিলা করা যায়। মুখের কালো দাগছোপ, শুষ্ক ত্বক, ত্বকের অসমান রঙের মতো বিশেষ বিশেষ সমস্যা সমাধানে অ্যাম্পুল খুবই কার্যকরী! অ্যাম্পুল অনেক বেশি ঘন এবং কোরিয়ার মেয়েদের ত্বক পরিচর্যার রুটিনে তার স্থান একেবারে বাঁধা! তবে রোজকার ত্বক পরিচর্যায় অ্যাম্পুল রাখার দরকার নেই। ত্বকে কোনও সমস্যা দেখা দিলে তবেই অ্যাম্পুল প্রয়োগ করুন।
ইমালশন

লোশনের চেয়ে হালকা এবং সিরামের চেয়ে বেশি ঘন অথচ অতটা কনসেনট্রেটেড নয় - সংক্ষেপে এই হল ইমালশন। মুখের লোশন আরও হালকা আর পাতলা হলে যেমন হয়, ইমালশন অনেকটা তেমনি। ওয়াটার-বেসড এই ময়শ্চারাইজার আপনার ত্বককে প্রস্তুত করে তোলে যাতে ত্বক পরিচর্যার অন্যান্য সামগ্রী ত্বকে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, কম্বিনেশন বা সেনসিটিভ প্রকৃতির, তাঁদের জন্য ইমালশন খুবই উপকারী, কারণ এটি একদিকে যেমন হাউড্রেটিং, তেমনি ময়শ্চারাইজিং আর সেই সঙ্গে নন-কোমেডোজেনিক। দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যায় বাড়তি খানিকটা আর্দ্রতা যোগ করতে সিরাম বা অ্যাম্পুলের সঙ্গে ইমালশন ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের উপর একটি ময়শ্চারের পোর্ট তৈরি করে এবং ত্বক পরিচর্যার উপাদানগুলির উপকারিতাকে ত্বকের গভীরেই আটকে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে আরও জেল্লাদার, আরও মসৃণ!
Written by Manisha Dasgupta on 9th Sep 2020