খুসকির সমস্যায় আমাদের সবাইকেই কোনও না কোনও সময় ভুগতে হয়। খুসকি যেমন বিরক্তিকর, তেমনি অস্বস্তিকর, কিন্তু তা সামাল দেওয়ার বেশ কিছু উপায় আছে। সমস্যার মূলে পৌঁছে যদি খুসকি সারাতে চান, তা হলে আমরা তো আছিই! জেনে নিন খুসকি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য, আর কীভাবে তা দূর করবেন সেই হদিশ।
- খুসকি কী?
- খুসকি কেন হয়?
- কীভাবে খুসকির চিকিৎসা করা হয়?
- 01. চুলকোবেন না
- 02. ত্বক স্নিগ্ধ রাখে এমন প্রডাক্ট ব্যবহার করুন
- 03. হেয়ার অয়েল
- 04. বেছে নিন অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু
খুসকি কী?

সেবোরিক ডার্মাটাইটিসের একটি কম গুরুতর ধরন হল খুসকি। এটি ত্বকের একধরনের সমস্যা, যার ফলে মাথায় চুলকানি হয়। মাথার ত্বকে আঁশের মতো সাদা সাদা চামড়া ওঠে, চুলকোয়, জ্বালা করে। সহজ কথায়, মাথায় শুকনো খোসার মতো চামড়া উঠলে তাকেই খুসকি বলা হয় আর চুলকোনোর সঙ্গে সঙ্গে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠে।
খুসকি কেন হয়?

খুসকি নানা কারণে হতে পারে। এটি জিনঘটিত কারণ থেকে হতে পারে, চিকিৎসাগত কারণে হতে পারে, আবার চুলে লাগানোর সরঞ্জামের উপাদানে স্পর্শকাতরতা থেকেও হতে পারে। ত্বক অত্যন্ত শুকনো হলে, আবহাওয়া খুব ঠান্ডা হলে, মানসিক চাপ থাকলে বা কড়া শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও খুসকি দেখা দিতে পারে। সাধারণত বয়সে নবীনদের মধ্যেই বেশি খুসকি দেখা দেয়, কারণ ওই বয়সে শরীরে হরমোনগত পরিবর্তন হয়। অনেকে মনে করেন অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় থাকলে বা অপরিচ্ছন্ন থাকলে খুসকি হয়, কিন্তু এটি ভুল ধারণা। অনেকসময় মাথা অতিরিক্ত পরিষ্কার করলেও খুসকি হতে পারে। পাশাপাশি আরও অনেক ত্বকের সমস্যার মতো খুসকিও জিনঘটিত হতে পারে।
কীভাবে খুসকির চিকিৎসা করা হয়?

খুসকি যদিও এক ব্যক্তি থেকে পাশের ব্যক্তিতে ছড়ায় না, তাও এটি লজ্জায় পড়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে। কেউই চাইবেন না তাঁর পুরো চুলে সাদা সাদা আঁশ দেখা যাক। তবে চিন্তার কিছু নেই। বাড়িতে বসেই খুসকি কমানোর অসংখ্য উপায় রয়েছে। খুসকি থেকে রেহাই পাওয়ার রইল কয়েকটি সহজ উপায়।
01. চুলকোবেন না

অল্পস্বল্প খুসকি হলে তা কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল মাথা না চুলকোনো। মাথার ত্বক চুলকে প্রদাহ বাড়িয়ে দেবেন না। মরশুমি খুসকি কমানোরও এটাই উপায়।
02. ত্বক স্নিগ্ধ রাখে এমন প্রডাক্ট ব্যবহার করুন

শ্যাম্পু করার পরে স্নিগ্ধ কোনও প্রডাক্ট লাগিয়ে ত্বক শীতল রাখুন। গোলাপজল আর অ্যালো ভেরা জেল মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে রাখতে পারেন, সেটা স্ক্যাল্পে স্প্রে করুন। এই মিশ্রণটি সারাদিন ধরে ব্যবহার করা যায় এবং এতে চুল তেলতেলে হবে না। চুলকানির অনুভূতি কমাতে অ্যালো ভেরা জেল সরাসরি চুলের গোড়ায় লাগাতে পারেন। ল্যাকমে নাইন টু ফাইভ ন্যাচারাল অ্যালো আকোয়া জেল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং ত্বক আর চুল, দুইয়ের পক্ষেই ভালো। ফ্ল্যাক্সিড জেলও খুসকি কমাতে খুব ভালো কাজ করে।
03. হেয়ার অয়েল

খুসকির মূল কারণ শুষ্কতা, তাই তেল মাখার চেয়ে ভালো সমাধান আর কী হতে পারে? গত চারহাজার বছর ধরে অসংখ্যা কারণে চুলে তেল মাখার প্রচলন রয়েছে। চুল মজবুত, চকচকে করার পাশাপাশি চুলের সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত করতেও তেলের কার্যকারিতা প্রমাণিত। মাথায় মালিশ করে তেল মাখলে চুলের ফলিকলগুলো উজ্জীবিত হয় ও চুলের বাড়বৃদ্ধি উন্নত হয়। এ সব উপকারিতা ছাড়াও চুলে তেল মাখলে খুসকি কমে। এর ফলে চুল প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা আর পুষ্টি পায়। তেল মাখলে স্ক্যাল্পে আর্দ্রতা বেড়ে যায়, ফলে ত্বক শান্ত হয় এবং চুলকানি আর অস্বস্তি কমে। চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করার সময়ও ত্বক অতিরিক্ত শুকনো হয়ে যায় না।
পছন্দের হেয়ার অয়েল মাসাজ করে স্ক্যাল্পে মেখে নিন। যে কোনও তেল দিয়েই কাজ হবে। নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল এবং অনিয়ন অয়েল এ ব্যাপারে সেরা। মাসাজ থেকে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পেতে তেল একটা ছোট বাটিতে নিয়ে হালকা গরম করে তবেই মাখুন। গরম তেল ত্বকে সাধারণ তাপমাত্রার তেলের চেয়ে সহজে শুষে যেতে পারে।
04. বেছে নিন অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু

শ্যাম্পু করা অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু ভুল শ্যাম্পু মাখলে চুলের স্বাভাবিক তেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা আপনার সমস্যার সমাধান করে, অর্থাৎ অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু। ডাভ ড্যানড্রাফ ক্লিন অ্যান্ড ফ্রেশ শ্যাম্পু/Dove Dandruff Clean & Fresh Shampoo-র মতো অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু বেছে নিন। এটি খুসকি কমাতে পটু এবং তা ডাক্তারিভাবে পরীক্ষিত। এই শ্যাম্পু আপনার স্ক্যাল্পে শীতলতার অনুভূতি ছড়িয়ে দেয় এবং ত্বকের চুলকানি, প্রদাহ কমায়। মাইক্রো ময়শ্চার সিরামে ভরা এই শ্যাম্পু আপনার ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে খুসকির মোকাবিলা করে।
Written by Manisha Dasgupta on 22nd Feb 2022