আজকাল যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে আমরা থাকি তাতে ত্বক শুকনো লাগাটা আশ্চর্যের কিছু নয়। আমাদের মুখে সারাক্ষণই হামলা চালায় পরিবেশের দূষিত উপাদান, অতিবেগুনি রশ্মি আর প্রচণ্ড গরম বা শীতের মতো চরম আবহাওয়া। সব কিছুই আমরা সহ্য করে নিই, এমনকী আটকানোর চেষ্টাটুকুও করি না। তার ওপর রয়েছে কোনও চিন্তাভাবনা বা রিসার্চ না করে একের পর এক নতুন নতুন প্রডাক্ট স্কিনকেয়ার রুটিনে যোগ করা, তাতে ত্বকের স্বাস্থ্য আরও খারাপ হয়ে যায়। সেজন্যই আজকাল রূপচর্চায় উৎসাহীরা দামি পাথরের নির্যাস মেশানো ত্বক পরিচর্যার সামগ্রী খুঁজছেন, তা সে অনলাইনে হোক বা অফলাইনে। কেন দামি পাথর বা জেমস্টোন মেশানো স্কিনকেয়ার ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সে সম্পর্কে রইল কিছু তথ্য...
কেন জেমস্টোন মেশানো স্কিনকেয়ার নিয়ে সকলে এত মাতামাতি করছেন?

জেমস্টোন দিয়ে ত্বক পরিচর্যার ধারণা আমাদের ভালোমতোই আছে - যেমন জেমস্টোন দিয়ে তৈরি ফেস রোলার রূপচর্চায় আগ্রহীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। সৌন্দর্যের কারণে অসম্ভব জনপ্রিয় রয়ে উঠেছে গুয়া শা। রোজ-কোয়ার্টজ, জেড, অ্যামেথিস্ট, রুডের মতো দামি পাথর দিয়ে তৈরি এ সব প্রডাক্ট ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে।
মনে করা হয় জেমস্টোনের মধ্যে হিলিং প্রপার্টি অর্থাৎ রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে, এমনকী ত্বকের ওপরে লাগালেও তা দিয়ে কাজ হয়... সঞ্চিত এনার্জির ভাঁড়ার কাজে লাগিয়ে ব্রণ, প্রদাহ, সংক্রমণ কমিয়ে ত্বক পরিশুদ্ধ করে আর পুষ্টি জোগায় এ সব জেমস্টোন। এই সব পাথরে একধরনের কম্পমান শক্তি থাকে যা আমাদের এনার্জিকে প্রভাবিত করে এবং সেই সঙ্গে দাগছোপ কমায়, ত্বক এক্সফোলিয়েট করে, প্রদাহ কমায় এবং ত্বকে এক লাবণ্যময় দীপ্তি এনে দেয়। পাশাপাশি নেগেটিভ এনার্জি কমানো, হৃদচক্রের সঙ্গে আমাদের যোগস্থাপন করা, আত্মপ্রেম বাড়ানো এবং ভাগ্য ফেরানোর মতো কাজও করে এ সব পাথর।
এ সব কারণেই আজকাল জেমস্টোন মিশ্রিত স্কিনকেয়ারের রেওয়াজ হয়েছে। ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈজ্ঞানিক উপাদানের সঙ্গে মিলে এই সব পাথর স্কিনকেয়ার প্রডাক্টের সার্বিক কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে।
ত্বকের অবস্থা উন্নত করার অন্যতম উপায় হল জেমস্টোন ব্যবহার করা। এই পাথর আপনার ত্বক উজ্জীবিত করে এবং আক্ষরিক অর্থেই ত্বকে প্রাণ ফেরায়। সে জন্যই আমরা আমাদের ত্বক পরিচর্যার রুটিনে পেরিডট পাথরটি অন্তর্ভুক্ত করেছি।
ত্বকের ক্ষেত্রে পেরিডট স্টোনের উপকারিতা

ঝলমলে সবুজ রঙের পেরিডট স্টোন মানসিক উদ্বেগ কমায়, স্বাস্থ্য ভালো করে এবং নেতিবাচক আবেগ দূরে রাখে। কিন্তু পেরিডট যে ত্বকের পক্ষেও উপকারী, এ কথা কি জানতেন? বস্তুত পেরিডটে ত্বকের জন্য একাধিক উপকারিতা রয়েছে, এবং সে কারণেই স্কিনকেয়ার রুটিনে রাখতে হবে পেরিডট।
1) ত্বক পুনরুজ্জীবিত করে
প্রতিদিন আমাদের শরীরের ওপর দিয়ে অনেক ধকল যায় - কাজের চাপ, মানসিক চাপ, পরিবেশগত ক্ষতির প্রভাব, এ সব কিছুই ত্বকের ওপরে ফুটে বেরোয়। এই ক্ষতি কময়ে ত্বক পরিচর্যার ওপরে জোর দিতেই হবে। পেরিডটের ভূমিকা এখানেই। পরীক্ষিত এই ত্বক পরিচর্যার উপাদানটি আপনার ত্বকে এনার্জি ফিরিয়ে আনে এবং ত্বকের বিবর্ণ ভাব কমায়।
2) ত্বকের অক্সিজেন গ্রহণক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে
সার্বিক স্বাস্থ্য ও ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে অক্সিজেন জরুরি। অক্সিজেন শরীরের রোগ সারানোর ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, কোষ আর্দ্র রাখে, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় (বয়সের ছাপ কমায়) এবং মুখের স্নিগ্ধ আর্দ্রভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ত্বককে অন্যান্য স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট শুষে নিতেও সাহায্য করে অক্সিজেন। পেরিডট পাথর ত্বকের অক্সিজেন গ্রহণক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে!
3) সার্বিক উজ্জ্বলতা ধরে রাখে
ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন ঢুকলে ত্বক সঞ্জীবিত হয়ে ওঠে এবং তা মুখে ধরা পড়ে। আপনার ত্বক পরিচর্যার রুটিনে একগাদা উপাদান থাকার দরকার নেই, যা আছে তা কার্যকর হলেই চলবে। আর তার জন্য আপনার রুটিনে ঢুকিয়ে নিন পেরিডট স্টোন। সহজ, তাই না?
Written by Kayal Thanigasalam on 5th Feb 2022